🏏 ৩য় দিনের লাঞ্চে ইংল্যান্ডের চমকপ্রদ ঘুরে দাঁড়ানো: জেমি স্মিথ ও হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণ

🏏 ৩য় দিনের লাঞ্চে ইংল্যান্ডের চমকপ্রদ ঘুরে দাঁড়ানো: জেমি স্মিথ ও হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণ

🏏 ৩য় দিনের লাঞ্চে ইংল্যান্ডের চমকপ্রদ ঘুরে দাঁড়ানো: জেমি স্মিথ ও হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণ

লেখক: Cricbuzz বাংলা টিম
তারিখ: ৪ জুলাই, ২০২৫
স্থান: এজবাস্টন, ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ড বনাম ভারতের মধ্যকার চলমান টেস্ট সিরিজের তৃতীয় দিনের সকালের সেশনে যা ঘটেছে, তা ক্রিকেট ভক্তদের চমকে দিয়েছে নিঃসন্দেহে। মাত্র ১০ বলে দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড যখন ধসে পড়ার পথে, তখন জেমি স্মিথ এবং হ্যারি ব্রুক এক অবিশ্বাস্য রকমের পাল্টা আক্রমণে ভারতীয় বোলারদের উপর ছড়ি ঘোরান।

দু’জনের অপরাজিত ১৬৫ রানের জুটি ৮৪/৫ থেকে ইংল্যান্ডকে নিয়ে যায় ২৪৯/৫-এ, এবং সেই সাথে তারা ভারতের বিপক্ষে লাঞ্চের আগেই ১৭২ রান তুলে নেয়, যা সকালের একটি দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ সেশনের সাক্ষী হয়ে রইল।


🎯 দিনের শুরু: এক ভয়ঙ্কর ধাক্কা

সকালের সেশন শুরুতেই ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজ দেখিয়ে দিলেন কেন তাকে বলা হয় ভারতের অন্যতম ভয়ংকর ফাস্ট বোলার। দিনের মাত্র প্রথম ওভারেই টেস্ট কিংবদন্তি জো রুট এবং অধিনায়ক বেন স্টোকসকে টানা দুই বলে ফিরিয়ে দেন সিরাজ।

  • রুট একটি লেগ-সাইড ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে রিশভ পন্থের হাতে ক্যাচ তুলে দেন।

  • স্টোকসকে প্রথম বলেই শর্ট পিচ ডেলিভারি দিয়ে চমকে দেন সিরাজ, যেটি ব্যাটের হ্যান্ডেলে লেগে সরাসরি উইকেটকিপারের গ্লাভসে জমা পড়ে।

মাত্র ৮৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে ইংল্যান্ড, পুরো দলের ভরসার জায়গা যখন কার্যত ধসে পড়ে।


জেমি স্মিথের আগমন: পাল্টা যুদ্ধের শুরু

এই কঠিন সময়ে ক্রিজে আসেন জেমি স্মিথ, যিনি ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার-ব্যাটার। কিন্তু তিনি যেন পরিস্থিতির চাপকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন।

হ্যাটট্রিক বলেই সরাসরি চার মেরে নিজেকে জানান দেন। এরপর মাত্র ৮০ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে তিনি ইংল্যান্ডের পক্ষে যুগ্মভাবে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন।

তাঁর ইনিংসে ছিল আগ্রাসন, নিয়ন্ত্রণ এবং সঠিক শট নির্বাচন। একদিকে তিনি দ্রুত রান তুলছিলেন, অপরদিকে হ্যারি ব্রুক কিছুটা ধীরগতিতে শুরু করলেও পরে সঙ্গত দেন অসাধারণভাবে।


🧱 হ্যারি ব্রুক: দৃঢ়তার আরেক নাম

হ্যারি ব্রুক ইনিংস শুরু করেছিলেন মন্থর গতিতে, কিন্তু ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরেন। একসময় ভারতীয় পেসারদের উপর আস্থা রেখে দুর্দান্ত ড্রাইভ, পুল ও কাট শট খেলেন।

তিনি ৭২ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন, এবং পরে স্মিথের সঙ্গে রান তোলার গতি বজায় রাখেন। তাদের জুটির ১০০ রান সম্পূর্ণ হয় মাত্র ৯০ বলেই, যা থেকে বোঝা যায় তারা কতটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাট করছিলেন।


🔥 প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর এক ওভারে ২৩ রান

প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর একটি ওভার ছিল বিশেষভাবে স্মরণীয়, যেখানে জেমি স্মিথ ৪টি চার এবং একটি ছয় মারেন। ঐ এক ওভারেই স্কোরবোর্ডে ২৩ রান যোগ হয়। এরফলে স্মিথ মাত্র ৩৮ বলে ৪৯-এ পৌঁছে যান, যা ছিল একটি অভাবনীয় গতির ইনিংস।


🌪️ স্পিনেও কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি ভারত

ভারত যখন পেসে কাজ না হওয়ায় স্পিনারদের নিয়ে আসে, তখনও স্মিথ-র ব্রুককে আটকানো সম্ভব হয়নি।

  • ওয়াশিংটন সুন্দরকে ড্রাইভ করে স্মিথ দুটি চার মারেন।

  • রবীন্দ্র জাদেজাকেও রেহাই দেননি; চার এবং ছয় মেরে আগ্রাসন অব্যাহত রাখেন।

এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ২৪৯/৫, যেখানে স্মিথ অপরাজিত ১০২ রান এবং ব্রুক অপরাজিত ৯১ রান করে লাঞ্চে যান।


📊 স্ট্যাটস হাইলাইটস

ব্যাটসম্যান রান বল চার ছয়
জেমি স্মিথ 102* 80 15 2
হ্যারি ব্রুক 91* 120 10 1
বোলার ওভার রান উইকেট
মোহাম্মদ সিরাজ 10 45 2
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ 8 68 1

📉 ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ

ভারতের জন্য এই সেশনটি ছিল হতাশাজনক। সিরাজের প্রথম ওভারে জোড়া আঘাতের পর মনে হয়েছিল ইংল্যান্ড খুব দ্রুত গুটিয়ে যাবে, কিন্তু সেই আশার ছাই চাপা পড়ে জেমি স্মিথ ও হ্যারি ব্রুকের ব্যাটে।

এখন ভারতের লিড এখনও ৩৩৮ রান থাকলেও, ইংল্যান্ডের এই ছন্দ ধরে রাখা ভারতীয় শিবিরে চাপ বাড়াবে নিঃসন্দেহে।


উপসংহার

৩য় দিনের সকালের সেশন নিঃসন্দেহে ইংল্যান্ডের নামে লেখা থাকবে। দুটি বড় উইকেট হারিয়ে যেখান থেকে ইংল্যান্ডকে উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছিল, সেখানে স্মিথ ও ব্রুক এক অনবদ্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন সাহস, পরিকল্পনা ও আগ্রাসনের মিশেলে। এখন দেখার বিষয়, তারা এই পার্টনারশিপকে কতদূর এগিয়ে নিতে পারে এবং ভারত কীভাবে আবার ম্যাচে ফিরে আসার পথ খুঁজে পায়।


📢 আপনার মতামত দিন!

এই ম্যাচের এই নাটকীয় পাল্টা আক্রমণ আপনাকে কতটা অবাক করেছে? নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। ক্রিকেটের আরও হালনাগাদ বিশ্লেষণ পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন নিয়মিত।